তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বই বিশ্বগ্রাম - ব্যাখ্যা কর। অথবা ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে পৃথিবী কীভাবে হাতের মুঠোয় এসেছে? - ব্যাখ্যা কর।
বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি পরিবেশ যেখানে পৃথিবীর সকল মানুষ একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যেমে একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে। মার্শাল ম্যাকলুহান হচ্ছেন বিশ্বগ্রামের জনক। বিশ্বগ্রামের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করেও প্রত্যেকেই একে অপরের সাথে সহজেই খুব দ্রুত যোগাযোগ করতে পারে। যা তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া সম্ভব নয়। তাই বলা যায়- তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বই বিশ্বগ্রাম।
ইন্টারনেটকে বিশ্বগ্রামের মেরুদন্ড বলা হয় কেন? - ব্যাখ্যা কর। অথবা বিশ্বগ্রাম হচ্ছে ইন্টারনেট নির্ভর ব্যবস্থা - ব্যাখ্যা কর।
বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি পরিবেশ যেখানে পৃথিবীর সকল মানুষ একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যেমে একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে। বিশ্বগ্রামের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করেও প্রত্যেকেই একে অপরের সাথে সহজেই খুব দ্রুত যোগাযোগ করতে পারে। এই যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হল কানেক্টিভিটি বা ইন্টেরনেট। কানেক্টিভিটি বা ইন্টেরনেট ব্যতীত সহজেই যোগাযোগ সম্ভব না। তাই ইন্টারনেটকে বিশ্বগ্রামের মেরুদন্ড বলা হয়।
ই-কমার্স পণ্যের ক্রয়-বিক্রয়কে কিভাবে সহজ করেছে? ব্যাখ্যা কর। অথবা “আজকাল ঘরে বসে কেনাকাটা অধিকতর সুবিধাজনক”- ব্যাখ্যা কর। অথবা ই-কমার্স ব্যবসা বাণিজ্যকে সহজ করেছে – ব্যাখ্যা কর।
বিশ্বগ্রাম ধারণায় ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যপক পরিবর্তন হয়েছে। এখন ক্রেতা-বিক্রেতাকে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে কিংবা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে হয় না। ক্রেতা বা ভোক্তা বাসায় বসে ইন্টারনেট এর সাহায্যে কোন ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে পণ্য বা সেবা পছন্দ করে ক্রয় করেতে পারছে এবং অনলাইনে মূল্য পরিশোধ করতে পারছে, যাকে অন-লাইন শপিং বলা হয়। ইলেকট্রনিক কমার্স বা ই-কমার্স একটি বাণিজ্য ক্ষেত্র যেখানে ইন্টারনেট বা অন্য কোন কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবা ক্রয়-বিক্রয় বা লেনদেন হয়ে থাকে। ই-কমার্সের প্রধানতম সুবিধা হল সময় ও ভৌগলিক সীমাবদ্ধতা দূর করে অর্থাৎ ঘরে বসে যেকোন পন্য ক্রয়-বিক্রয় করা যায় এবং ক্রয়-বিক্রয়কৃত পন্যের মূল্য পরিশোধ করা যায়।
“ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করা যায়”-ব্যাখ্যা কর অথবা মুদ্রা অর্জনের জন্য এখন আর বিদেশে যাওয়ার দরকার নেই- ব্যাখ্যা কর।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে দেশ এবং বিদেশে ব্যপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং কর্মসংস্থানের নতুন দার উন্মোচন করেছে। ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে দেশে বসে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে দীর্ঘস্থায়ী চুক্তি না করে, স্বাধীনভাবে নিজের দক্ষতা অনুযায়ী কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করাকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কোন একটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হয়। তারপর ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন জব প্ল্যাটফর্মে (upwork.com, fiverr.com, freelancer.com) প্রোজেক্ট ভিত্তিক কাজের আবেদন করে কাজ পাওয়া যায়। এভাবে দেশ বা দেশের বাইরের কোন কোম্পানি বা ব্যক্তির কাজ ঘরে বসেই করা যায় এবং অর্থ উপার্জন করা যায়।
আইসিটি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবলের জন্য উপার্জনের ক্ষেত্রে সহজ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে- ব্যাখ্যা কর।
আইসিটি শিক্ষায় শিক্ষিত যেকোন ব্যক্তি ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে সহজেই উপার্জন করতে পারছে। কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে দীর্ঘস্থায়ী চুক্তি না করে, স্বাধীনভাবে নিজের দক্ষতা অনুযায়ী কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করাকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং। কোন ব্যক্তি যদি আইসিটি এর বিভিন্ন শাখা যেমন- গ্রাফিক্স, ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি এর যেকোন একটি বিষয়ের উপর দক্ষতা অর্জন করে। তাহলে ঘরে বসেই ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করে সহজেই অর্থ উপার্জন করতে পারবে।
শিক্ষাক্ষেত্রে অনলাইন লাইব্রেরীর ভূমিকা বুঝিয়ে লিখ।
অনলাইন লাইব্রেরী বলতে এমন সব ওয়েবসাইটকে বুঝায় যেখানে সকল বইয়ের সমাহার থাকে এবং যেখান থেকে একজন ব্যবহারকারী যেকোন সময় যেকোন বই বিনামূল্যে বা টাকার বিনিময়ে পড়তে পারে। ফলে একজন পাঠকের বই পড়ার জন্য নির্দিস্ট কোন স্থানে যেতে হয় না এমনকি টাকাও খরচ করতে হয় না। অনলাইন লাইব্রেরীর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল- একটি বই বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে যেকোন সংখ্যক পাঠক যেকোন সময় একসাথে পড়তে পারে।
“টেলিমেডিসিন এক ধরনের সেবা”-বুঝিয়ে লিখ অথবা “ঘরে বসে ডাক্তারের চিকিৎসা গ্রহণ করা যায়’–ব্যাখ্যা কর অথবা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে দূরবর্তী রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব - ব্যাখ্যা কর।
প্রতিরক্ষা ও আইসিটি একে অপরের পরিপূরক - ব্যাখ্যা কর।
প্রতিরক্ষা ও আইসিটি একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে, কারণ আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারিতা অনেকাংশে প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল। আইসিটি প্রতিরক্ষা খাতে বিভিন্নভাবে অবদান রাখে, যেমনঃ
তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণঃ আইসিটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেনাবাহিনী দ্রুত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করতে পারে, যা সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক।
যোগাযোগঃ প্রতিরক্ষা বাহিনীর মধ্যে দ্রুত ও নিরাপদ যোগাযোগ নিশ্চিত করতে আইসিটি অপরিহার্য। এটি অপারেশনাল কার্যক্রমকে সমন্বয় করতে সাহায্য করে।
সাইবার নিরাপত্তাঃ সাইবার হামলা থেকে রক্ষা পেতে আইসিটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরক্ষা খাতে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ।
অটোমেশন ও রোবোটিক্সঃ আধুনিক যুদ্ধের ক্ষেত্রে অটোমেশন ও রোবোটিক্সের ব্যবহার বাড়ছে, যা আইসিটি প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে।
ডেটা বিশ্লেষণঃ বড় ডেটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা কৌশল উন্নত করা যায়, যা যুদ্ধের পরিস্থিতি বুঝতে এবং পূর্বাভাস দিতে সহায়ক।
সুতরাং, প্রতিরক্ষা ও আইসিটি একে অপরের পরিপূরক, কারণ প্রযুক্তির উন্নতি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর ও নিরাপদ করে তোলে।
ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণাটি ব্যাখ্যা কর।
ডিজিটাল বাংলাদেশ একটি ধারণা যা বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়নকে নির্দেশ করে। এই ধারণার মূল উদ্দেশ্য হলো তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে দেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা, সরকারি সেবা সহজলভ্য করা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা। ডিজিটাল বাংলাদেশের আওতায় ইন্টারনেট, মোবাইল প্রযুক্তি, এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে ডিজিটালাইজ করা হয়। এর ফলে জনগণের মধ্যে তথ্যের প্রবাহ বৃদ্ধি পায় এবং সেবা গ্রহণের প্রক্রিয়া দ্রুত ও কার্যকর হয়।
“সংবাদে আজ যে কেউ যেকোনো স্থান থেকে যুক্ত হতে পারে” বর্ণনা কর।
প্রযুক্তির উন্নতির ফলে এখন যে কেউ যেকোনো স্থান থেকে সহজেই সংবাদে যুক্ত হতে পারে। ইন্টারনেট এবং স্মার্টফোনের মাধ্যমে মানুষ তাদের মতামত, খবর এবং তথ্য শেয়ার করতে পারছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ভিডিও কনফারেন্সিং এবং লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে, দূরবর্তী স্থান থেকেও সংবাদ পরিবেশন করা সম্ভব হচ্ছে। সুতরাং সংবাদে আজ যে কেউ যেকোনো স্থান থেকে যুক্ত হতে পারে।
বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব”-বুঝিয়ে লেখ অথবা সিমুলেটর ও মডেলিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ সম্ভব – ব্যাখ্যা কর।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব । হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সমন্বয়ে কম্পিউটার সিস্টেমের মাধ্যমে কোন একটি পরিবেশ বা ঘটনার বাস্তবভিত্তিক বা ত্রিমাত্রিক চিত্রভিত্তিক রুপায়ন হল ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। এই প্রযুক্তিতে কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশকে এমনভাবে তৈরি ও উপস্থাপন করা হয়,যা ব্যবহারকারীর কাছে সত্য ও বাস্তব বলে মনে হয়।
এক্ষেত্রে কম্পিউটার সিম্যুলেশনের মাধ্যমে ড্রাইভিং প্রশিক্ষনের জন্য চালককে একটি নির্দিষ্ট আসনে বসতে হয়। চালকের মাথায় পরিহিত হেড মাউন্টেড ডিসপ্লের সাহায্যে কম্পিউটার দ্বারা সৃষ্ট যানবাহনের অভ্যন্তরীন অংশ এবং আশপাশের রাস্তায় পরিবেশের একটি মডেল দেখানো হয়। এর সঙ্গে যুক্ত থাকে একটি হেড ট্র্যাকিং সিস্টেম। ফলে ব্যবহারকারী যানবাহনের অভ্যন্তরীন ও বাহ্যিক অংশের ৩৬০ ডিগ্রী দর্শন লাভ করেন এবং কম্পিউটার সৃষ্ট পরিবেশে মগ্ন থেকে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ লাভ করেন। অতএব, প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে প্রাক ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব।
বাস্তবে অবস্থান করেও কল্পনাকে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব- ব্যাখ্যা কর।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ‘বাস্তবে অবস্থান করেও কল্পনাকে ছুয়ে দেখা সম্ভব’ উক্তিটি যথাযথ। হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সমন্বয়ে কম্পিউটার সিস্টেমের মাধ্যমে কোন একটি পরিবেশ বা ঘটনার বাস্তবভিত্তিক বা ত্রিমাত্রিক চিত্রভিত্তিক রুপায়ন হল ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। এই প্রযুক্তিতে কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশকে এমনভাবে তৈরি ও উপস্থাপন করা হয়,যা ব্যবহারকারীর কাছে সত্য ও বাস্তব বলে মনে হয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশে বিশেষ পোশাক পরিধান করে বাস্তবে নয় ত্রিমাত্রিক গ্রাফিক্স প্রযুক্তির মাধ্যমে কম্পিউটারের পর্দায় যেমন গাড়ি চালানো অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়। ঠিক তেমনি বাস্তবে অবস্থান করে চাঁদে যাওয়ার মত কল্পনাকেও ছুঁয়ে দেখা যায়।
“ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে রক্তপাতহীন অপারেশন সম্ভব”-বুঝিয়ে লেখ অথবা রক্তক্ষরণ ছাড়াই অপারেশন সম্ভব – ব্যাখ্যা কর অথবা নিম্ন তাপমাত্রায় চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর অথবা ‘শীতলীকরণ প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব’–ব্যাখ্যা কর অথবা নূনতম ধকল সহিষ্ণু শল্যচিকিৎসা পদ্বতিটি ব্যাখ্যা কর।
ক্রায়োসার্জারি হল এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে অত্যাধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়োগ করে শরীরের অস্বাভাবিক বা রোগাক্রান্ত কোষগুলোকে ধ্বংস করার মাধ্যমে ত্বকের বিভিন্ন ক্যান্সার সহ আরো নানান জটিল রোগের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। গ্রিক শব্দ ‘ক্রায়ো’ অর্থ বরফের মতো ঠাণ্ডা এবং ‘সার্জারি’ অর্থ হাতের কাজ। ক্রায়োসার্জারিকে অনেক সময় ক্রায়োথেরাপিও বলা হয়। এই পদ্ধতিতে ক্রায়োপ্রোব দিয়ে আক্রান্ত টিস্যুতে তরল নাইট্রোজেন বা আর্গন গ্যাস সহ অন্যান্য ক্রায়োজনিক এজেন্ট পৃথক পৃথক ভাবে প্রবেশ করিয়ে কোষের তাপমাত্রায় -৪১০ আনা হয়। ফলে আক্রান্ত টিস্যু জমে বরফ খন্ডে পরিণত হলে এতে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে টিস্যুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপর পুনরায় ঐ স্থানে ক্রায়োপ্রোবের সাহায্যে হিলিয়াম গ্যাস প্রবেশ করিয়ে তাপমাত্রাকে ২০০ থেকে ৩০০ পর্যন্ত উঠিয়ে টিস্যুটিকে গলিয়ে ধ্বংস করা হয়। ক্রায়োসার্জারির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য বা সুবিধা হল এতে কাটা-ছেঁড়া করা তথা অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয় না। এজন্যই ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে রক্তপাতহীন আপারেশন সম্ভব।
ঝুকিপুর্ণ কাজে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ব্যাখ্যা কর অথবা “ঝুকিপূর্ণ কাজে যন্ত্র শ্রমিক ব্যবহার সুবিধাজনক”-ব্যাখ্যা কর অথবা রোবটে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তার ভূমিকা ব্যাখ্যা কর অথবা অথবা “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা”-বুঝিয়ে লেখ অথবা চিকিৎসা সেবায় আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স কীভাবে সম্পর্কিত? বুঝিয়ে লিখ অথবা “কম্পিউটার একটি প্রোগ্রাম নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র”-বুঝিয়ে লেখ।
ঝুকিপুর্ণ কাজে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হলো রোবট। রোবট হচ্ছে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত এক ধরণের ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল যান্ত্রিক ব্যবস্থা যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বা কোন ব্যক্তির নির্দেশে কাজ করতে পারে। এটি তৈরী হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নীতিতে। যা মানুষ কিংবা বিভিন্ন বুদ্ধিমান প্রাণীর মতো কাজ করতে পারে। রোবট মূলত সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রিত যা সুনির্দিষ্ট কোন কাজ দ্রুত ও নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করতে পারে। রোবট বিরতিহীনভাবে কাজ করতে পারে এবং রোবট যেকোনো ঝুঁকিপূর্ণ বা অস্বাস্থ্যকর স্থানে কাজ করতে পারে।
“যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে”-ব্যাখ্যা কর।
স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করার অন্যতম যন্ত্র হচ্ছে রোবট। রোবট হলো এক ধরনের ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল যান্ত্রিক ব্যবস্থা। যা কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা ইলেকট্রনিক সার্কিট কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এক ধরনের স্বয়ংক্রিয় বা আধা-স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বা যন্ত্রমানব যা মানুষের মতো অনেক দুঃসাধ্য কাজ করতে পারে। মানুষ যেমন চিন্তাভাবনা করে স্বয়ংক্রিয় ভাবে কাজ করতে পারে ঠিক তেমনি রোবটও চিন্তাভাবনা করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে। তাই বলা যায়- যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে।
‘বর্তমানে ড্রাইভারবিহীন গাড়িতেও যাতায়াত করা যায়’ – ব্যাখ্যা কর।
বর্তমানে ড্রাইভারবিহীন গাড়িতেও যাতায়াত করার প্রযুক্তিটি হলো আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এটিতে মানুষের মতো বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তাশক্তিকে কম্পিউটার বা যন্ত্র দ্বারা অনুকৃত করা হয়ে থাকে। ফলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন যন্ত্র মানুষের মতো চিন্তা ভাবনা করে তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এজন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে ড্রাইভারবিহীন গাড়িতে দুর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এছাড়া যাত্রীকে সামনের বিভিন্ন অবস্থা, যেমন যানজট আছে কিনা, হঠাৎ কোনো অবজেক্ট সামনে চলে আসছে কিনা ইত্যাদি বিষয়ে সতর্ক করে যাতায়াত নিরাপদ করে থাকে।
‘আচরণিক ডেটা’ ব্যাখ্যা কর।
আচরণিক ডেটা হল বায়োমেট্রিক্স ডেটা, যা বায়োমেট্রিক্স পদ্বতিতে ব্যবহার করা হয়। আচরণের মাধ্যমে ব্যক্তি শনাক্তকরণের পদ্বতিটি হলো বায়োমেট্রিক্স। বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি যার দ্বারা কোন ব্যক্তির গঠনগত এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা সনাক্ত করা হয়। এক্ষেত্রে ব্যক্তির গঠনগত এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্য বায়োমেট্রিক্স যন্ত্রের সাহায্যে ইনপুট নিয়ে একটি কেন্দ্রীয় সার্ভার কম্পিউটারে জমা রাখা হয় যা পরবর্তিতে দেওয়া ইনপুটের সাথে মিলিয়ে সনাক্ত করে থাকে।
আচরণের মাধ্যমে ব্যক্তি শনাক্তকরণের পদ্বতি ব্যাখ্যা কর অথবা “প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তি শনাক্তকরণ করা যায়” – ব্যাখ্যা কর।
আচরণের মাধ্যমে ব্যক্তি শনাক্তকরণের পদ্বতিটি হলো বায়োমেট্রিক্স। বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি যার দ্বারা কোন ব্যক্তির গঠনগত এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা সনাক্ত করা হয়। এক্ষেত্রে ব্যক্তির গঠনগত এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্য বায়োমেট্রিক্স যন্ত্রের সাহায্যে ইনপুট নিয়ে একটি কেন্দ্রীয় সার্ভার কম্পিউটারে জমা রাখা হয় যা পরবর্তিতে দেওয়া ইনপুটের সাথে মিলিয়ে সনাক্ত করে থাকে।
বায়োমেট্রিক্স একটি আচরণীক বৈশিষ্ট্য নির্ভর প্রযুক্তি- ব্যাখ্যা কর অথবা বায়োমেট্রিক্স টেকনোলজি ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো কী কী? অথবা অফিসের নিরাপত্তার জন্য বায়োমেট্রিক্সের ব্যবহার সুবিধাজনক-ব্যাখ্যা কর।
বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি যার দ্বারা কোন ব্যক্তির গঠনগত এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা সনাক্ত করা হয়। এই প্রযুক্তিতে আচরণগত বৈশিষ্ট্য যেমন- ভয়েস রিকগনিশন, সিগনেচার ভেরিফিকেশন ও টাইপিং কীস্ট্রোক এর উপর ভিত্তি করে একজন ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা সনাক্ত করা যায়। তাই বলা যায়- বায়োমেট্রিক্স একটি আচরণীক বৈশিষ্ট্য নির্ভর প্রযুক্তি।
বায়োইনফরমেটিক্সে ব্যবহৃত ডেটা কী? ব্যাখ্যা কর।
বায়োইনফরমেটিক্স হলো বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যেখানে কম্পিউটার প্রযুক্তি, ইনফরমেশন থিওরি এবং গাণিতিক জ্ঞানকে ব্যবহার করে বায়োলজিক্যাল ডেটা এনালাইসিস করা হয়। বায়োইনফরমেটিক্সে যে সব ডেটা ব্যবহৃত হয় তা হলো ডিএনএ, জিন, এমিনো অ্যাসিড এবং নিউক্লিক অ্যাসিড ইত্যাদি।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কৃষিক্ষেত্রে কী প্রভাব রাখে? ব্যাখ্যা কর।
কোন জীব থেকে একটি নির্দিষ্ট জিন বহনকারী DNA খন্ড পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তরের কৌশলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলা হয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-কে জেনেটিক মডিফিকেশনও বলা হয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে কৃষিতে উৎপাদনের লক্ষ্য চারটিঃ
১. শস্যের গুণাগুণ মান বৃদ্ধি করা
২. শস্য থেকে সম্পূর্ণ নতুন উপাদান উৎপাদন করা
৩. পরিবেশের বিভিন্ন ধরণের হুমকি থেকে শস্যকে রক্ষা করা
৪. শস্যের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো
অল্প জায়গায় অধিক ফসল উৎপাদন সম্ভব – ব্যাখ্যা কর।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং মাধ্যমে আমরা সীমিত জমিতে অধিক ফসল উৎপাদন করতে পারি। উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ ও রোগমুক্ত চারা ব্যবহার করে আমরা অল্প জায়গায় বেশি ফসল পেতে পারি। সুতরাং, সঠিক প্রযুক্তি, পদ্ধতি এবং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অল্প জায়গায় অধিক ফসল উৎপাদন সম্ভব।
কোন প্রযুক্তি ব্যবহারে পাটের জীবন রহস্য উন্মোচিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর অথবা মহিষের জীবন রহস্য উন্মোচিত হয়েছে কোন প্রযুক্তির মাধ্যমে? ব্যাখ্যা কর অথবা কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সারা বছর আমের ফলল সম্ভব? ব্যাখ্যা কর।
পাটের জীবন রহস্য উন্মোচিত হয়েছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে। কোন জীব থেকে একটি নির্দিষ্ট জিন বহনকারী DNA খন্ড পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তরের কৌশলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলা হয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-কে জেনেটিক মডিফিকেশনও বলা হয়। এই প্রযুক্তির সাহায্যে শস্যের গুনাগুণ বৃদ্ধি করা যায়। নতুন জাত তৈরি করা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করা যায়।
তথ্য প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতায় ডায়াবেটিস রোগীরা উপকৃত হচ্ছে- ব্যাখ্যা কর অথবা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কী ভাবে মানুষকে সহায়ক? ব্যাখ্যা কর।
কোন জীব থেকে একটি নির্দিষ্ট জিন বহনকারী DNA খন্ড পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তরের কৌশলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলা হয়। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে রিকম্বিনেন্ট DNA প্রযুক্তির মাধ্যমে মানবদেহের জন্য ইনসুলিন তৈরি করা হয় যা ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগী শরীরে গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। তাই বলা যায়- তথ্য প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতায় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তি ব্যবহারে ডায়াবেটিস রোগীরা উপকৃত হচ্ছে।
আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর অথবা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী তৈরিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ব্যাখ্যা কর অথবা ন্যানোটেকনোলজি মডার্ন লাইফকে করেছে সাশ্রয়ী ও গতিশীল-ব্যাখ্যা কর।
আণবিক পর্যায়ের গবেষণা প্রযুক্তিটি হচ্ছে ন্যানোটেকনোলজি। পারমাণবিক বা আণবিক স্কেলে অতিক্ষুদ্র ডিভাইস তৈরি করার জন্য ধাতব বস্তুকে সুনিপুণভাবে কাজে লাগানোর প্রযুক্তিকে ন্যানোটেকনোলজি বলে। অর্থাৎ ন্যানো প্রযুক্তির সাহায্যে ন্যানোমিটার স্কেলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপাদান দিয়ে কাঙ্খিত কোনো বস্তুকে এতটাই ক্ষুদ্র করে তৈরি করা যায় যে, এর থেকে আর ক্ষুদ্র করা সম্ভব নয়। ন্যানোটেকনোলজির ফলে সকল যন্ত্রের আকার ছোট হয়েছে, উৎপাদন ব্যয়, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে মডার্ন লাইফকে সাশ্রয়ী ও গতিশীল করছে। এছাড়া চিকিৎসা বিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক্স শক্তি উৎপাদন সহ বহুক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারছে।
Poralekha24.com: স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য Lecture Sheet, MCQ/CQ, Presentation ও অনলাইন ও অফলাইন কোচিং সেবা।
কপিরাইট © ২০২৫ - ২০২৫ Poralekha24.com. সকল অধিকার সংরক্ষিত।