+88 01737 325759
info@poralekha24.com
হোম » লেকচারসমূহ » প্রথম অধ্যায় পাঠ-৪: ভার্চুয়াল রিয়েলিটি

প্রথম অধ্যায় পাঠ-৪: ভার্চুয়াল রিয়েলিটি




ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (Virtual Reality)


কম্পিউটার সিস্টেমের সাহায্যে কোন একটি পরিবেশ বা ঘটনার কৃত্রিম ত্রিমাত্রিক রুপায়ন হলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। কম্পিউটার প্রযুক্তির সাহায্যে কৃত্রিম পরিবেশকে এমনভাবে তৈরি ও উপস্থাপন করা হয়,যা ব্যবহারকারীর কাছে সত্য ও বাস্তব বলে মনে হয়।

১৯৬২ সালে  মর্টন এল হেলগি তাঁর তৈরি সেন্সোরামা স্টিমুলেটর নামক যন্ত্রের মাধ্যমে প্রথম ভার্চুয়াল রিয়েলিটির আত্নপ্রকাশ করেন। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে বাস্তব অনুভব করার জন্য তথ্য আদান প্রদানকারী বিভিন্ন ধরণের ডিভাইস ব্যবহার করা হয়। যেমন-

১. মাথায় হেড মাউন্টেড ডিসপ্লে (Head Mounted Display)

২. হাতে একটি ডেটা গ্লোভ (Data Glove)

৩. শরীরে একটি পূর্ণাঙ্গ বডি স্যুট (Body Suit) ইত্যাদি পরিধান করতে হয়।


ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সিস্টেম তৈরির উপাদান সমুহ


১। ইফেক্টরঃ ইফেক্টর হলো বিশেষ ধরণের ইন্টারফেস ডিভাইস যা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি পরিবেশের সাথে সংযোগ সাধন করে। যেমন- হেড মাউন্টেড ডিসপ্লে।

২। রিয়েলিটি সিমুলেটরঃ এটি এক ধরণের হার্ডওয়্যার যা ইফেক্টরকে সংবেদনশীল তথ্য সরবরাহ করে। যেমন- বিভিন্ন ধরণের সেন্সর।

৩। অ্যাপ্লিকেশনঃ বিভিন্ন সিমুলেশন সফটওয়্যার সমূহ। যেমন- অটোডেস্কের “Division”।

৪। জিওমেট্টিঃ জিওমেট্রি হলো ভার্চুয়াল পরিবেশের বিভিন্ন বস্তুর বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কিত তথ্যাবলী।


ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার/প্রয়োগ


প্রকৌশল ও বিজ্ঞান

বিজ্ঞানের জটিল বিষয় নিয়ে গবেষণা, গবেষণালব্ধ ফলাফল বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন। বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রসেসের সিমুলেশনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যপক প্রয়োগ রয়েছে।

 

খেলাধুলা ও বিনোদন

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির কল্যাণে কম্পিউটারের সাথে কোন খেলায় অংশগ্রহন বা কম্পিউটার সিস্টেমে অনুশীলন সহজ হচ্ছে। দ্বিমাত্রিক বা ত্রিমাত্রিক সিমুলেশনের মাধ্যমে নির্মিত হচ্ছে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী নির্ভর ছবি যা সবার কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।


ব্যবসা ও বাণিজ্যে

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে ভোক্তা বা ক্রেতার কাছে পণ্যের ব্যবহার পদ্ধতি ও অন্যান্য সুবিধাসমূহ সহজে উপস্থাপন করা যায়। এছাড়া ব্যবসায়িক কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান। উৎপাদিত বা প্রস্তাবিত পণ্যের কৌণিক উপস্থাপন ইত্যাদি।

 

শিক্ষাক্ষেত্রে

শিক্ষা গ্রহণ ও প্রদানের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির অনেক প্রভাব রয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার জটিল বিষয়গুলো সহজে উপস্থাপন এবং পাঠদানের বিষয়টি সহজে চিত্তাকর্ষক ও হৃদয়গ্রাহী করা যায়।

 

স্বাস্থ্যসেবা

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহারের অন্যতম বৃহৎ ক্ষেত্র হচ্ছে চিকিৎসাবিজ্ঞান। এই প্রযুক্তিতে সিমুলেশনের মাধ্যমে জটিল সার্জারি অত্যান্ত সূক্ষভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। চিকিৎসকদের নতুন চিকিৎসা সম্পর্কে ধারণা অর্জন বা প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

 

ড্রাইভিং নির্দেশনা

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে গাড়ি চালনার বিভিন্ন বিষয়ে বাস্তব ধারণা লাভ করতে পারছে ফলে প্রশিক্ষণার্থী দ্রুত গাড়ি চালনা শিখতে পারছে।

 

সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণে

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রয়োগ করে সেনাবাহিনীতে অস্ত্র চালনা এবং আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের ব্যবহারে কম সময়ে নিখুঁতভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান করা যায়।

 

বিমানবাহিনী প্রশিক্ষণে

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রয়োগ করে বিমানবাহিনীতে বিমান চালনা প্রশিক্ষণ এবং প্যারাস্যুট ব্যবহারে প্রশিক্ষণ প্রদান করা যায়।

 

নৌবাহিনী প্রশিক্ষণে

নৌবাহিনীতে যুদ্ধ প্রশিক্ষণ এবং ডুবোজাহাজ চালনা প্রশিক্ষণে ব্যপকভাবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করা হয়।

 

মহাশূণ্য অভিযানে

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রয়োগ করে ত্রিমাত্রিক সিমুলেশন তৈরির মাধ্যমে জ্যোতির্বিজ্ঞানের ছাত্র-শিক্ষকরা সৌরজগৎ এর গ্রহ বা গ্রহাণুপুঞ্জের অবস্থান, গঠনপ্রকৃতি ও গতিবিধি, গ্রহের মধ্যস্থিত বিভিন্ন বস্তু বা প্রাণের উপস্থিতি ইত্যাদি সম্পর্কে সহজেই ধারণা অর্জন করতে পারে।

 

ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষা

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সাহায্যে যাদুঘরে ত্রিমাত্রিক চিত্রের মাধ্যমে ইতিহাস-ঐতিহ্য উপস্থাপন করা যায়। ফলে আগত দর্শণার্থীরা তা দেখে মুগ্ধ হয় ও বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বাস্তব ধারণা লাভ করে থাকে।


প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রভাব

 

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতিবাচক প্রভাব

১। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ক্ষেতে জটিল বিষয়গুলো ত্রিমাত্রিক চিত্রের মাধ্যমে আকর্ষণীয় ও হৃদয়গ্রাহী করা যায়।

২। ঝুঁকিপূর্ণ উৎপাদন ব্যবস্থায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রয়োগ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সহজ ও সরল করা সম্ভব।

৩। বাস্তবায়নের পূর্বে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সিমুলেশনের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে খরচ কমানো যায়।

 

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির নেতিবাচক প্রভাব

১। বাস্তবের স্বাদ পাওয়ায় কল্পনার রাজ্যে বিচরন করতে পারে।

২। যেহেতু ভার্চুয়াল রিয়েলিটি একটি কম্পিউটার সিস্টেম তাই এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

৩। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যয়বহুল হওয়ায় সবাই এই প্রযুক্তি ব্যবহারে সুবিধা পায় না। ফলে ডিজিটাল বৈষম্য তৈরি হয়।

মোঃ আবু সাঈদ

মোঃ আবু সাঈদ

প্রভাষক (আইসিটি)

একজন দক্ষ, উদ্ভাবনী এবং প্রযুক্তি-বান্ধব আইসিটি শিক্ষক, যিনি শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রযুক্তি জ্ঞানের বিকাশ এবং ব্যবহারিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিবেদিত। কম্পিউটার বিজ্ঞান, প্রোগ্রামিং, ডিজিটাল লিটারেসি এবং আধুনিক সফটওয়্যার/হার্ডওয়্যার প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানে অভিজ্ঞ। শিক্ষার্থীদের বয়স ও শ্রেণি অনুযায়ী উপযোগী পাঠ পরিকল্পনা তৈরি এবং বাস্তবভিত্তিক কার্যক্রমের মাধ্যমে ক্লাস পরিচালনায় দক্ষ। কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং, গুগল ও মাইক্রোসফট অ্যাপ্লিকেশন, PHP, C/C++, JavaScript, পাইথন, এইচটিএমএল/সিএসএস সহ বিভিন্ন ডিজিটাল টুল ও প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে পারদর্শী।

আইসিটি কোচিং সেন্টার

banner image

সাজানো-গুছানো এবং কোয়ালিটিফুল ক্লাস কন্টেন্ট দ্বারা অফলাইন অথবা অনলাইনে এইচএসসি ও আলিম শিক্ষার্থীদের আইসিটি কোচিং করানো হয়।

আমাদের সম্পর্কে

শিক্ষার্থীদের সুসংগঠিত এবং গুণগত ক্লাস কন্টেন্ট যা পরীক্ষার ভাল ফলাফল এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের নেতৃত্ব দেয়।

লিংকসমূহ

  • হোম
  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • লগইন
  • রেজিস্টার

সার্ভিস

  • আইসিটি কোর্স
  • ওয়েব ডিজাইন
  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
  • নেটওয়ার্কিং

কপিরাইট © 2025 - 2025 Poralekha24.com. All rights reserved.