+88 01737 325759
info@poralekha24.com
হোম » লেকচারসমূহ » প্রথম অধ্যায় পাঠ-৩: বিশ্বগ্রামের ধারণা সংশ্লিষ্ট প্রধান উপাদান সমূহ

প্রথম অধ্যায় পাঠ-৩: বিশ্বগ্রামের ধারণা সংশ্লিষ্ট প্রধান উপাদান সমূহ



বিশ্বগ্রামের ধারণা সংশ্লিষ্ট প্রধান উপাদান সমূহ

১। যোগাযোগ (Communication)

২। কর্মসংস্থান (Employment)

৩। শিক্ষা (Education)

৪। চিকিৎসা (Treatment)

৫। গবেষণা (Research)

৬। অফিস (Office)

৭। বাসস্থান (Residence)

৮। ব্যবসা বাণিজ্য (Business)

৯। বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগ (Entertainment and Social Communication)

১০। সংবাদমাধ্যম (News)

১১। সাংস্কৃতিক বিনিময় (Cultural Exchange)


যোগাযোগ (Communication)

ইংরেজি শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ হলো যোগাযোগ। যখন দু'জন বা তার বেশি লোক পরস্পর কথা বলে তখন তাকে যোগাযোগ বলে। যোগাযোগ হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে আমরা আমাদের চিন্তা, অনুভূতি, ধারণা ইত্যাদি একে অপরের সাথে আদান-প্রদান করি।

আলোচনার সুবিধার্তে কমিউনিকশন সিস্টেমকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

ক) টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা

খ) তথ্য যোগাযোগ ব্যবস্থা

গ) প্রত্যক্ষ যোগাযোগ বা যাতায়াত ব্যবস্থা


টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা

সাধারণভাবে টেলিযোগাযোগ হলো যে কোনো দূরত্বে যন্ত্র বা ডিভাইস নির্ভর পরস্পর যোগাযোগ পদ্বতি। টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার গুরত্বপূর্ণ অংশ হলো তিনটি।

১. ডিজিটাল টেলিফোন নেটওয়ার্ক

২. মোবাইল কমিউনিকেশন

৩. স্যাটেলাইট


ডিজিটাল টেলিফোন নেটওয়ার্ক

বর্তমান প্রযুক্তির আধুনিক সব সুবিধা নিয়ে তৈরি টেলিফোনকে ডিজিটাল টেলিফোন বলে।





মোবাইল কমিউনিকেশন

বিশ্বগ্রাম এর অন্যতম শর্ত হলো বিশ্বের সকল মানুষ সর্বদা সংযুক্ত থাকা। আর এটি সম্ভব হয়েছে মোবাইল কমিউনিকেশন এর মাধ্যমে। মোবাইল কমিউনিকেশন এর প্রধান উপাদান হলো মোবাইল ফোন। আধুনিক মোবাইল ফোন এর সুবিধা হলোঃ

১) ভিডিও কল, ভয়েস ও ভিডিও চ্যাট ও অডিও ভিডিও রেকর্ডিং।

২) এসএমএস, এমএমএস, গান শোনা ও দেখা।

৩) ব্লুটুথ ও ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ইমেইল ও জিপিস। 


 


স্যাটেলাইট

স্যাটেলাইট হলো মহাকাশে উৎক্ষেপিত বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় উদ্ভাবিত কৃত্রিম উপগ্রহ। পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণ করানোর জন্য আধুনিক স্যাটেলাইটগুলোকে বায়ুমন্ডলের বাইরে একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে বিশেষ ধরনের তারবিহীন রিসিভার/ট্রান্সমিটার সংযুক্ত করে স্থাপন করা হয়। এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ২৩০০০ মাইল বা ৩৬০০০ কিমি দুরত্বে স্থাপন করা হয় যাতে এটি ২৪ ঘন্টায় পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পারে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস, টেলিভিশন সম্প্রচার, রেডিও যোগাযোগ, ইন্টারনেট যোগাযোগে এবং জিপিএস এর মতো বিভিন্ন যোগাযোগমূলক কাজে স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়।


 


তথ্য যোগাযোগ ব্যবস্থা

যে যোগাযোগ ব্যবস্থা তথ্যকে নিরাপদে ও নিরবিচ্ছিন্নভাবে এক স্থান থেক অন্য স্থানে স্থানান্তরিত করে তাকে তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বলে। তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো হলঃ

১. ইন্টারনেট

২. ই-মেইল

৩. টেলিকনফারেনসিং

৪. ভিডিও কনফারেনসিং

৫. বুলেটিন বোর্ড


ইন্টারনেট

ইন্টারনেট শব্দটি এসেছে international network থেকে। ইন্টারনেটকে সংক্ষেপে নেট (net) বা বাংলায় অর্ন্তজাল বলে। ইন্টারনেট হচ্ছে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য কম্পিউটারের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা যা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত এবং যেখানে আইপি বা ইন্টারনেট প্রোটোকল নামক ব্যবস্থার মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করে।

১৯৮২ সালে বিভিন্ন কম্পিউটারের মধ্যে নেটওয়ার্ক সংযোগ স্থাপনে উপযোগী টিসিপি/আইপি (TCP/IP) উদ্ভাবিত হলে প্রথম আধুনিক ইন্টারনেটের ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়।   


                                     


ই-মেইল 

ই-মেইল এর পূর্ণ রুপ হল  ইলেক্ট্রনিক মেইল। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস (কম্পিউটার, মোবাইল প্রভৃতি) এর মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান ব্যবস্থাকে ই-মেইল বলে। এতে টেক্সট বার্তার সাথে অ্যাটাচমেন্ট আকারে ডকুমেন্ট, ছবি, অডিও, ভিডিওসহ যেকোনো ডিজিটাল ফাইল পাঠানো যায়। 




ই-মেইল এর দুটি অংশ থাকেঃ প্রথম অংশটি ব্যবহারকারীর পরিচিতি (user name) এবং শেষাংশটি ডোমেইন নেম (domain name)। যেমনঃ sayeed@gmail.com - এখানে sayeed হলো username এবং gmail.com হলো domain name। এই দুটি অংশ @ চিহ্ন দ্বরা পৃথক করা হয়। কয়েকটি ই-মেইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হলোঃ gmail, yahoo, hotmail, outlook ইত্যাদি।


ই-মেইল প্রেরণ প্রক্রিয়া   


     


টেলিকনফারেনসিং           

বিভিন্ন ভৌগোলিক দূরত্বে অবস্থান করে টেলিকমিউনিকেশন যন্ত্রপাতি যেমন- টেলিফোন, মোবাইল ইত্যাদি ব্যবহার করে সভা কার্যক্রম পরিচালনা করার কৌসল হলো টেলিকনফারেন্সিং। টেলিকনফারেন্সিং তিন প্রকারঃ

১. পাবলিক কনফারেন্সঃ সবার জন্য উন্মুক্ত কনফারেন্স। 

২. ক্লোজড কনফারেন্সঃ নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড দিয়ে জয়েন করা কনফারেন্স।

৩. রিড অনলি কনফারেন্সঃ শুধু কার্যবিবণী দেখতে পারবে এবং মন্তব্য করতে পারবে। 



          


ভিডিও কনফারেন্সিং

যেকোনো ভৌগোলিক দূরত্বে অবস্থানকারী একাধিক ব্যক্তিবর্গের মধ্যে টেলিকমিউনিকেশন প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে সংঘটিত যে যোগাযোগ ব্যবস্থায় কথা বলার পাশাপাশি অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিবর্গ ভিডিওর মাধ্যমে পরস্পরকে সরাসরি দেখতে পারে তাকে ভিডিও কনফারেন্সিং বলে। 

ভিডিও কনফারেন্সিং এর জন্য প্রয়োজন ওয়েবক্যাম, ইন্টারনেট কানেকশন এবং স্পিকারসহ প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার যেমন - হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ভাইবার, ম্যাসেঞ্জার ইত্যাদি। বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা ও স্বস্থ্য খাতে ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। 


  

বুলেটিন বোর্ড

বুলেটিন বোর্ড হচ্ছে একটি ইলেক্ট্রনিক নোটিশ বোর্ড যেখানে বিভিন্ন নোটিশ বা তথ্য সংরক্ষিত থাকে। অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা সুপার মার্কেটে বুলেটিন বোর্ড ব্যবহৃত হয় যেখানে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য, নোটিশ ক্রয়-বিক্রয়ের বিজ্ঞাপন, ব্যক্তিগত সংবাদ ইত্যাদি ডিজিটাল উপায়ে প্রদর্শিত হয়।


                                                                                                                                                                                       


প্রত্যক্ষ যোগাযোগ বা যাতায়াত ব্যবস্থা               

প্রত্যক্ষ যোগাযোগের ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির যে গুরুত্বপূর্ণ প্রায়োগিক প্রযুক্তিগুলো ব্যবহৃত হয় সেগুলো হলো-

১. রিজার্ভেশন সিস্টেম

২. জিপিএস                                                                                                                 

৩. জিআইএস 


রিজার্ভেশন সিস্টেম

যে সিস্টেম ব্যবহার করে দূর-দূরন্ত থেকে রিজার্ভ বা বরাদ্দ কাজ সম্পন্ন করা হয় তাকে রিজার্ভেশন সিস্টেম বলে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে এয়ারলাইন্স বা হোটেল রিজার্ভেশন হলো রিজার্ভেশন সিস্টেম এর উদাহারণ।



 

জিপিএস বা  Global Positioning System                                                                          

জিপিএস হলো একটি স্যাটেলাইট নির্ভর একমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা যার মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের যে কোনো স্থানের অবস্থান নিখুঁতভাবে নির্ণয় করা যায়। জিপিএস এর মাধ্যমে দুটি কাজ করা যায় - 

প্রথমত, কোনো বস্তু বা ব্যক্তির অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়। যেমন - জিপিএস এর মাধ্যমে গাড়ির অবস্থান নির্ণয় করা।

দ্বিতীয়ত, যে কেউ তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারবে এবং গন্তব্য থেকে তার দূরত্ব নির্ণয় করতে পারবে। যেমন- গুগল ম্যাপ। 


   


জিআইএস বা Geographic Information System

ভৌগোলিক তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ ব্যবস্থাকে জিআইএস বলে। এটি কম্পিউটারের মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ ব্যবস্থা যার মধ্য দিয়ে ভৌগোলিক তথ্যগুলোর সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে স্থানিক ও পারিসরিক সমস্যা চিহ্নিতকরণ, মানচিত্রায়ণ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তৈরিতে সহায়তা করে থাকে।



                     


কর্মসংস্থান

তথ্য প্রযুক্তির কারণে চাইলে এখন ঘরে বসেই অনলাইনে প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থানের সুযোগ বা বিজ্ঞপ্তি পাওয়া, ব্যাপক তথ্য প্রাপ্তির সুযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তি সেবাসমূহকে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্ত হয়ে ওঠা এমনকি ঘরে বসেই কাজ করার মধ্যমে অর্থ উপার্জন সম্ভব হচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তির কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ক্ষেত্রগুলোর বিকাশে ব্যাপক সহায়ক হয়ে উঠেছে।

১. ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং

২. উদ্যোক্ত উন্নয়ুন

৩. অনলাইন মাধ্যমে চাকরির সুযোগ


ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং

অনলাইন মার্কেটপ্লেসের হাজার হাজার কাজ থেকে নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী নির্দিষ্ট কোনো কাজ খুঁজে নেওয়া ও সেটি সম্পাদন করার পর বায়ারের কাছ থেকে পেমেন্ট গ্রহণ করার মাধ্যমে যে উন্মুক্ত পেশস ফ্রিল্যান্সিং কাজের সৃষ্টি হয়েছে সেটিকে আউটসোর্সিং বলে। 

আউটসোর্সিং সংশ্লিষ্ট অপ্র জনপ্রিয় শব্দটি হলো ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সিং এর অর্থ হলো মুক্ত বা স্বাধীন পেশা। নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের অধীনে না থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করাকে ফ্রিল্যান্সিং বলে। আর ফ্রিল্যান্সিং যারা করে তাদেরকে ফ্রিল্যান্সার বলে। কয়েকটি জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস হলো upwork.com, fiverr.com, freelancer.com ইত্যাদি। 




উদ্যোক্তা উন্নয়ন 

চাকরি করার মানসিকতা থেকে বের হয়ে উদ্যোক্তা হয়ে নিজে কিছু একটা করার স্বপ্নে বিভোর হয়ে উঠছে বর্তমান তরুন সমাজ। আর সফল উদ্যোক্তা উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন ধরনের তথ্য উপাত্ত যা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে ঘরে বসেই পাওয়া যাচ্ছে। উদাহরণ - বিকাশ, রকেট, নগদ ইত্যাদি ব্যবসার উদ্যোক্তা। 


 


অনলাইন মাধ্যমে চাকুরির সুযোগ

অফিসে অফিসে ঘুরে চাকুরি খুঁজার দিন বাংলাদেশে ক্রমেই ফুরিয়ে আসছে। কেননা এখন ইন্টারনেট মাধ্যমে চাকুরিপ্রার্থী ও চাকুরিদাতাদের সম্মেলন ঘটানো যায়। এ ধরনের জব পোর্টাল হল - bdjobs.com, ajkerchakri.com প্রভৃতি।




শিক্ষা (Education)

বিশ্বগ্রাম ধারণায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষা বিস্তারে একটি শক্তিশালী টুলস। ফরমাল এবং নন-ফরমাল উভয় পদ্ধতিতেই এটি অত্যন্ত  কার্যকর। বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায় পৃথিবীতে শিক্ষার আদি ধ্যান ধারণার ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ধারণাগুলো হলো - 

ই-লার্নিং

ইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষাই হচ্ছে ই-লার্নিং। ই-লার্নিং পদ্বতিতে যে কোনো সময় যে কোনো স্থানে শিক্ষা উপকরণের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করে। বর্তমানে পড়ালেখার জন্য বিভিন্ন ধরনের ই-লার্নিং পোর্টাল চালু হয়েছে যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই পছন্দের বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা করতে পারে। যেমন- poralekha24.com.




দূরশিক্ষণ বা ডিসটেন্স লার্নিং

বিশ্বগ্রাম ধারণায় শিক্ষা গ্রহনের জন্য কোন শিক্ষার্থীকে গ্রাম থেকে শহরে কিংবা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে হয় না। এতে সময়, অর্থ, পরিশ্রম, ইত্যাদি সাশ্রয় হয়। একজন শিক্ষক ঘরে বসেই বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিডিও টিউটোরিয়াল তৈরির পর অনলাইনে শেয়ার করে, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্লগিং করে, বিভিন্ন সামাজিক মিডিয়ার সাহায্যে লাইভ ক্লাস, ইত্যাদি মাধ্যমে শিক্ষা দান করতে পারে এবং শিক্ষার্থীরাও ঘরে বসেই শিক্ষা গ্রহন করতে পারে। একজন শিক্ষার্থী ঘরে বসে অনলাইনেই পরীক্ষা দিয়ে নিজেকে যাচাই করতে পারে। এমনকি ঘরে বসেই ফলাফল জানতে পারে। এই ধারণাকে বলা হয় দূরশিক্ষণ বা ডিসটেন্স লার্নিং




ইবুক ও অনলাইন লাইব্রেরি 


ইবুক বা ইলেকট্রনিক বুক বলতে ডিজিটাল ফর্মে টেক্সট, চিত্র ইত্যাদি ডকুমেন্ট বইকে বুঝায় যা কোন কম্পিউটার, ট্যাব, ই-বুক রিডার ও স্মার্ট ফোন ইত্যাদি ব্যবহার করে পড়া সম্ভব। এই ইবুকের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে অনলাইন লাইব্রেরি। অর্থাৎ অনলাইন লাইব্রেরি হলো এমন একটি প্ল্যাটফর্ম বা ওয়েবসাইট যেখানে ইবুকগুলো সংরক্ষিত থাকে এবং একজন পাঠক একটি স্মার্ট ডিভাইসে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে যেকোন বই পরতে পারে। অনলাইন লাইব্রেরির সুবিধা হলো যেকোন ভৌগোলিক অবস্থান থেকে যেকোন সময় বই পড়া যায় এবং একই সাথে একাধিক পাঠক একই বই পড়তে পারে।




চিকিৎসা সেবা (Healthcare and Treatment)

বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নির্ভর চিকিৎসা সেবা বা চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণা মানুষকে এনে দিয়েছে দীর্ঘ সুস্থ ও সুন্দর জীবন।

বিশ্বগ্রাম ধারণায় বর্তমানে চিকিৎসা সেবা প্রদান বা গ্রহনের জন্য কোন ডাক্তার বা রোগীকে এখন আর গ্রাম থেকে শহরে কিংবা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে হচ্ছে না। একজন চিকিৎসক বিশ্বের যেকোন স্থানে বসেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্যে দূরবর্তী অবস্থানের যেকোন রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে পারছে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্যে রোগী তা গ্রহণ করতে পারছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্যে ভিন্ন ভৌগলিক দূরুতে অবস্থানরত রোগীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, রোগ নির্ণয় কেন্দ্র, বিশেষায়িত নেটওয়ার্ক ইত্যাদির সমন্বয়ে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়াকে টেলিমেডিসিন বলা হয়।





গবেষণা (Research)

বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায় গবেষণা কাজে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিসীম। পূর্বে দেখা যেত, একই বিষয়ের উপর একাধিক বিজ্ঞানী গবেষণা করছেন কিন্তু একজন অন্য জনের খবর জানতেন না। বর্তমান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে বিজ্ঞানীরা তাদের চিন্তাধারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারছে। ফলে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে গবেষণা শুরু করলে ইন্টারনেটের সাহায্যে সবাই অবগত হয়। বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায় তথ্য নিয়ে গবেষণার জন্য গবেষককে এক দেশ থেকে অন্য দেশে, বড় কোন গবেষণা কেন্দ্রে বা বড় কোন লাইব্রেরিতে ছুটতে হচ্ছে না। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে ঘরে বসে সহজেই তথ্য সংগ্রহ করা যায়।




অফিস (Office)

বর্তমান বিশ্ব গ্রামে পরিবর্তিত হওয়ায় অফিসের বর্তমান ব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হতে চলেছে। চাকরিজীবীকে বা সেবাগ্রহীতাকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে ছুটতে হচ্ছে না। পৃথিবীর যেকোন স্থানে বসেই অফিসের কাজকর্ম করা যায় কিংবা সেবা গ্রহণ করা যায়। অফিসের জন্য প্রয়োজন হচ্ছেনা স্থায়ী ঠিকানার বা কোন অবকাঠামোর। বদলে যাচ্ছে অফিসের ফাইল-পত্র সংরক্ষণ ও দৈনন্দিন কাজ করার পদ্ধতি। যে সকল ব্যবস্থা বিশ্বগ্রামের অফিস ব্যবস্থাকে বদলে দিয়েছে-. কম্পিউটার, ইন্টারনেট, প্রিন্টার, সিসিটিভি, বিভিন্ন সফটওয়্যার এবং ওয়েবসাইট।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগের মাধ্যমে অফিসের ডকুমেন্ট তৈরি ও সংরক্ষন, কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের মধ্যে অভ্যন্তরীন ও বহিঃযোগাযোগ ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ তথা বাস্তবায়ন কার্যক্রম দক্ষতার সাথে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা যায়। এই ধরণের প্রযুক্তি নির্ভর কার্যক্রমকে বলা হয় অফিস অটোমেশন। 




বাসস্থান (Residence)

মানুষ যেখানে বাস করে সেটিই বাসস্থান। গতিনুগতিক এই ধারণা অনেকটাই বদলে যেতে শুরু করেছে। আধুনিক  ইন্টারনেটের যুগে মানুষ এক দেশে বসেই অন্য দেশে ভার্চুয়ালি বিচরণ বা বসবাস করতে পারে । ভিডিও চ্যাটিং এর মাধ্যমে উভয় প্রান্তের মানুষ একে অপরকে সামনা-সামনি দেখছে। সকলেই হয়ে উঠছেন ইন্টারনেট অধিবাসী বা নেটিজেন

বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায় মানুষের বাসস্থানের সুযোগ-সুবিধার ব্যপক পরিবর্তন হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগে স্মার্ট হোমের ধারণা তৈরি হয়েছে। স্মার্ট হোম হলো এমন একটি বাসস্থান যেখানে রিমোট এর সাহায্যে যেকোনো স্থান থেকে কোন বাডির সিকিউরিটি কন্ট্রোল সিস্টেম, হিটিং সিস্টেম, কুলিং সিস্টেম, লাইটিং সিস্টেম, বিনোদন সিস্টেমসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। স্মার্ট হোমকে হোম অটোমেশন সিস্টেমও বলা হয়।




ব্যবসা–বাণিজ্য (Business)


বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্যের ধারণারও ব্যপক পরিবর্তন হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতাকে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য যেতে হচ্ছে না এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে কিংবা এক দেশ থেকে অন্য দেশে। বিভিন্ন ডিভাইসের মাধ্যমে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই পণ্যের বাজার সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে পারছে। পণ্য উৎপাদনকারী বা সেবাদানকারী ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সকল পণ্য বা সেবার বিবরণ ছড়িয়ে দিতে পারছেন বিশ্ববাজারে। ক্রেতা বা ভোক্তা বাসায় বসে ইন্টারনেট এর সাহায্যে কোন ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে পণ্য বা সেবা পছন্দ করে ক্রয় করেতে পারছে এবং অনলাইনে মূল্য পরিশোধ করতে পারছে, যাকে অন-লাইন শপিং বলা হয়।


ইলেকট্রনিক কমার্স বা ই-কমার্স একটি বাণিজ্য ক্ষেত্র যেখানে ইন্টারনেট বা অন্য কোন কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবা ক্রয়/বিক্রয় বা লেনদেন হয়ে থাকে। কিছু ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম এর উদাহরণ- alibaba.com, amazon.com, daraz.com.bd rokomari.com ইত্যাদি। আধুনিক ইলেকট্রনিক কমার্স সাধারণত ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এর মাধ্যমে বাণিজ্য কাজ পরিচালনা করে।

 

ই–কমার্স এর ধরণ

পণ্য বিক্রয়ক্ষেত্র ও লেনদেনের প্রকৃতি অনুযায়ী ই-কমার্সকে প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা যায়।

 ১। Business to Consumer (B2C)

  ২। Business to Business (B2B)

  ৩। Consumer to Business (C2B)

 ৪। Consumer to Consumer (C2C)

 

ই–কমার্স এর সুবিধা

   ১। ই-কমার্সের প্রধান সুবিধা হলো সময় ও ভৌগলিক সীমাবদ্ধতা দূর করে।

 ২। ঘরে বসে যেকোন পন্য ক্রয়-বিক্রয় করা যায় এবং ক্রয়-বিক্রয় কৃত পন্যের মূল্য পরিশোধ করা যায় বিভিন্ন ব্যাংকের ডেবিড-ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, কুরিয়ার সার্ভিস, পোষ্ট অফিস ইত্যাদির মাধ্যমে।

  ৩। ব্যবসা শুরু ও পরিচালনায় খরচ কম হয়।

  ৪। বিজ্ঞাপন ও বিপণন সুবিধা, বাজার যাচাই ও তাৎক্ষণিক অর্ডার প্রদানে সুবিধা ইত্যাদি।

 

ই-কমার্স এর অসুবিধা

   ১। দূরবর্তী স্থানের পণ্যের অর্ডার ক্ষেত্র বিশেষে ব্যয়বহুল।

   ২। লেনদেনের নিরাপত্তা সমস্যা।

  ৩। রিয়েল পণ্য দেখার সুযোগ থাকে না।

    ৪। ডুপ্লিকেট পন্যের চটকদার বিজ্ঞাপন ইত্যাদি।




সংবাদমাধ্যম (News Media)

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্বগ্রামের যে কোন জায়গায় ঘটে যাওয়া ঘটনার বিবরণ, ছবি অথবা ভিডিও মুর্তেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে পাঠানো যায় এমনকি স্যাটেলাইট চ্যানেলের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা যায়। এছাড়া যে কোন খবরের আপডেট প্রতিনিয়ত নিউজ-পোর্টাল বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পাওয়া যায়। অর্থাৎ অতি দ্রুততার সাথে সংবাদ প্রচারের কারণে মানুষের জন্য তথ্য পাওয়া সহজ হয়েছে।




বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগ

একটা সময় মানুষের বিনোদনের প্রধান অবলম্বন ছিল স্থানীয় কিছু খেলাধুলা, বিভিন্ন রকম গান বাজনা ইত্যাদি। কিন্তু বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায় সিনেমা, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি আবিষ্কারের ফলে বিনোদন মাধ্যমের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। বিভিন্ন ওয়েবসাইট (youtube.com, soundcloud.com) থেকে বিনামূল্যে ভিডিও দেখা, অডিও শুনা বা ডাউনলোড করা যায়। এছাড়া কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনে গেইম খেলা বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। অনলাইনের মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানে অবস্থান করেও একাধিক খেলোয়ার বিভিন্ন গেমস খেলতে পারে।

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে মানুষ কম্পিউটার, স্মার্ট ফোন ইত্যাদি যন্ত্রের মাধ্যমে ইন্টারনেট এর সাথে সংযুক্ত হয়ে ভার্চুয়াল কমিউনিটি তৈরি করে এবং ছবি, ভিডিও সহ বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করে।

অতীতে সামাজিক যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল চিঠি যার কারনে বিশ্ব সাহিত্যের বড় একটা অংশ দখল করে আছে পত্র সাহিত্য। কিন্তু বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগের জন্য বিশ্বগ্রামের নাগরিকরা ব্যবহার করে Facebook, Twitter বা এই ধরণের  ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়া। বিশ্বগ্রাম নাগরিকের বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগের প্রধান মাধ্যমই হবে ইন্টারনেট যুক্ত একটি কম্পিউটার ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবিধাসমূহ–

     ১। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবার সাথে খুব সহজেই সংযুক্ত থাকা যায়।

    ২। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাই নিজস্ব অভিমত শেয়ার করে থাকে ফলে সমভাবাপন্ন মানুষ খুজে পাওয়া যায়।

    ৩। যেকোন পন্য বা সেবার প্রচারের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

    ৪। দ্রুতগতিতে তথ্যের বিস্তার হয়ে থাকে।

    ৫। অপরাধী সনাক্তকরণ ও গ্রেফতার করতে সহায়ক।

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অসুবিধাসমূহ–

    ১। মিথ্যা বা ভিত্তিহীন তথ্য প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।

     ২। পারস্পারিক সম্পর্কের বিচ্ছেদ হতে পারে।

    ৩। সাইবার সন্ত্রাসি কার্জক্রম হতে পারে।

    ৪। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।




সাংস্কৃতিক বিনিময়

বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায় ভিন্ন জাতি, বর্ণ, ধর্মের মানুষ একটি একক সমাজে বসবাস করছে। ফলে মানুষের যোগাযোগের ব্যপকতা এবং বিশ্বের সকল সংস্কৃতির মানুষের সাথে পরিচিত হওয়া সুযোগ ঘটেছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে একে অপরের সাথে তথ্য বিনিময় করার সুযোগ পাচ্ছে। ফলে ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মাঝে সংস্কৃতি বিনিময় ঘটছে। এর ফলে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ভূল ধারণা ও অন্ধবিশ্বাস দূর হছে এবং মানুষের চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন হচ্ছে।




মোঃ আবু সাঈদ

মোঃ আবু সাঈদ

প্রভাষক (আইসিটি)

একজন দক্ষ, উদ্ভাবনী এবং প্রযুক্তি-বান্ধব আইসিটি শিক্ষক, যিনি শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রযুক্তি জ্ঞানের বিকাশ এবং ব্যবহারিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিবেদিত। কম্পিউটার বিজ্ঞান, প্রোগ্রামিং, ডিজিটাল লিটারেসি এবং আধুনিক সফটওয়্যার/হার্ডওয়্যার প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানে অভিজ্ঞ। শিক্ষার্থীদের বয়স ও শ্রেণি অনুযায়ী উপযোগী পাঠ পরিকল্পনা তৈরি এবং বাস্তবভিত্তিক কার্যক্রমের মাধ্যমে ক্লাস পরিচালনায় দক্ষ। কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং, গুগল ও মাইক্রোসফট অ্যাপ্লিকেশন, PHP, C/C++, JavaScript, পাইথন, এইচটিএমএল/সিএসএস সহ বিভিন্ন ডিজিটাল টুল ও প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে পারদর্শী।

আইসিটি কোচিং সেন্টার

banner image

সাজানো-গুছানো এবং কোয়ালিটিফুল ক্লাস কন্টেন্ট দ্বারা অফলাইন অথবা অনলাইনে এইচএসসি ও আলিম শিক্ষার্থীদের আইসিটি কোচিং করানো হয়।

আমাদের সম্পর্কে

শিক্ষার্থীদের সুসংগঠিত এবং গুণগত ক্লাস কন্টেন্ট যা পরীক্ষার ভাল ফলাফল এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের নেতৃত্ব দেয়।

লিংকসমূহ

  • হোম
  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • লগইন
  • রেজিস্টার

সার্ভিস

  • আইসিটি কোর্স
  • ওয়েব ডিজাইন
  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
  • নেটওয়ার্কিং

কপিরাইট © 2025 - 2025 Poralekha24.com. All rights reserved.