+88 01737 325759
info@poralekha24.com
হোম » লেকচারসমূহ » প্রথম অধ্যায় পাঠ-৬: ক্রায়োসার্জারি, মহাকাশ অভিযান ও প্রতিরক্ষা।

প্রথম অধ্যায় পাঠ-৬: ক্রায়োসার্জারি, মহাকাশ অভিযান ও প্রতিরক্ষা।



ক্রায়োসার্জারি 

গ্রিক শব্দ ক্রাউস(kruos) থেকে ক্রায়ো (Cryo) শব্দটি এসেছে যার অর্থ বরফের মতো ঠাণ্ডা এবং ‘সার্জারি’ অর্থ শৈল্য চিকিৎসা। অর্থাৎ ক্রায়োসার্জারি হলো এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যাতে অত্যধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়োগ করে শরীরের অস্বাভাবিক বা রোগাক্রান্ত কোষগুলোকে ধ্বংস কর হয়। ক্রায়োসার্জারিকে অনেক সময় ক্রায়োথেরাপি বা ক্রায়োবায়োলেশনও  বলা হয়।

এই পদ্ধতিতে রোগাক্রান্ত অংশে হিমায়িত করার জন্য নিমোক্ত গ্যাসগুলো ব্যবহার করা হয়-

১. তরল নাইট্রোজেন

২. হিলিয়াম গ্যাস

৩. আর্গন গ্যাস

৪. ডাই মিথাইল ইথাইল প্রোপ্রেন ইত্যাদি।

ক্রায়োথেরাপি বা ক্রায়োসার্জারি যেভাবে কাজ করে

এই পদ্ধতিতে রোগাক্রান্ত কোষের তাপমাত্রা -১২০ থেকে -১৬৫ সেলসিয়াস নামিয়ে আনতে ইমেজিং যন্ত্রের সাহায্যে তরল আর্গন গ্যাস প্রয়োগ করা হয়। তাপমাত্রা অত্যধিক হ্রাসের ফলে কোষের পানি জমাটবদ্ধ হয়ে ঐ টিস্যুটি বরফপিণ্ডে পরিণত হয়। ফলে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধের কারণে টিস্যুটির ক্ষয় সাধিত হয়। পূনরায় ইমেজিং যন্ত্রের সাহায্যে কোষের ভিতরে  হিলিয়াম গ্যাস নিঃসরণের মাধ্যমে তাপমাত্রা ২০oc থেকে ৪০oc এ উঠানো হয়। তখন জমাটবদ্ধ কোষ বা টিস্যুটির বরফ গলে যায় এবং কোষ বা টিস্যুটি ধ্বংস হয়ে যায়।


ক্রায়োসার্জারির ব্যবহার 

টিউমার বা ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় এবং বেশকিছু অভ্যন্তরীণ শারীরিক ব্যাধি যেমন- লিভার ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার, ওরাল ক্যান্সার ইত্যাদি। এছাড়া ত্বকের ছোট টিউমার, তিল, আচিল ইত্যাদি ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।


ক্রায়োসার্জারির সুবিধা

১. এই পদ্ধতিতে তাপমাত্রা যখন হিমাঙ্কের নিচে নামানো হয় তখন সংশ্লিষ্ট স্থান হতে রক্ত সরে যায় এবং রক্তনালিগুলো সংকুচিত হয় ফলে রক্তপাত হয় না বললেই চলে, হলেও খুব কম।

২. বহুল প্রচলিত কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি এবং বিভিন্ন অস্ত্রোপচারের চেয়ে এই পদ্ধতির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কম।

৩. তাৎক্ষনিক শরীরের কোন অংশ অবশ কিংবা ব্যাথামুক্তির কাজে ক্রায়োসার্জারি ব্যবহার করা হয়।


ক্রায়োসার্জারির অসুবিধা

এই পদ্ধতিতে রোগাক্রান্ত কোষ বা টিস্যু শনাক্ত করার সময় যদি সঠিকভাবে অবস্থান শনাক্ত করা না যায় এবং ক্রায়োসার্জারি ব্যবহার করা হয় তাহলে সুস্থ কোষের ক্ষতি হতে পারে।

 



মহাকাশ অভিযান

মহাকাশ অভিযান হচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ঊর্ধ্ধে মহাকাশ উড্ডয়ন এবং ঐ স্থানের পরিবেশ ও ভৌত ধর্মাবলিকে পর্যবেক্ষণ করা। স্বয়ংক্রিয় ভাবে বা রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে কিংবা নভোচারীবাহী মহাকাশযান দ্বারা মহাকাশ অভিযান পরিচলনা করা যায়। মনুষ্যবাহী নভোযান এবং মনুষ্যহীন বা রোবটিক নভোযান উভয় মাধ্যমেই এই অভিযান পরিচলনা ও নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে। বিশ্বের প্রথম মানুষ বহনকারী মহাকাশযান ভস্টক-১।


মহাকাশ অভিযান এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যঃ 

১। মহাকাশ অভিযানের মাধ্যমে মহাশূন্যস্থিত কোন বস্তু সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করা হয়।

২। মহাকাশ অভিযানের মাধ্যমে পৃথিবী সম্পর্কে এবং মহাকাশ সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ।

৩। মহাকাশে বাণিজ্যিকভাবে পদার্থ প্রক্রিয়াকরণ ও উৎপাদন।

৪। পৃথিবীর বাইরের পরিবেশ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও নতুন সীমানা আওত্তাধীন করা।




প্রতিরক্ষা ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (Defence with ICT)

বর্তমান বিশ্বে প্রতিরক্ষা বা জাতীয় নিরাপত্তা শুধুমাত্র অস্ত্র ও সৈন্যের ওপর নির্ভর করে না। এখন যুদ্ধক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা ICT (Information and Communication Technology) একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ICT ব্যবহারের মাধ্যমে একটি দেশ তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী, দ্রুত ও সুরক্ষিত করতে পারে।

 

ICT-এর ভূমিকা প্রতিরক্ষায়

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে প্রধান ভূমিকা গুলো হলো —


তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ: স্যাটেলাইট, রাডার, ও ড্রোনের মাধ্যমে শত্রুর অবস্থান ও গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয় এবং সেগুলো বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


সাইবার নিরাপত্তা (Cyber Security): দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য ও নেটওয়ার্ককে হ্যাকিং বা সাইবার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ICT অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 


যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন: ICT ব্যবহারের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের মধ্যে দ্রুত, নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হয়। 


প্রশিক্ষণ ও সিমুলেশন: ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (VR), সিমুলেটর ও ডিজিটাল সফটওয়্যারের মাধ্যমে সেনাদের আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যা বাস্তব পরিস্থিতির অনুকরণে কার্যকর অভিজ্ঞতা দেয়। 


স্বয়ংক্রিয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা: রোবট, ড্রোন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-এর সাহায্যে এখন যুদ্ধক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নজরদারি ও প্রতিক্রিয়া জানানো সম্ভব হচ্ছে।


বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে

বাংলাদেশও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ICT ব্যবহারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী এখন উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, সাইবার সিকিউরিটি ইউনিট এবং প্রযুক্তিনির্ভর তথ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবহার করছে।
তাছাড়া, দেশীয় প্রযুক্তিবিদ ও আইটি বিশেষজ্ঞরা প্রতিরক্ষা খাতে ডিজিটাল সমাধান উদ্ভাবনে কাজ করছেন।


তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আজকের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ। ICT ব্যবহারের মাধ্যমে একটি দেশ তার নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং সার্বভৌমত্ব আরও দৃঢ় করতে পারে।
ভবিষ্যতের যুদ্ধ হবে প্রযুক্তিনির্ভর— তাই ICT জ্ঞান অর্জন ও প্রযুক্তি উন্নয়নই একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মূল চাবিকাঠি।

মোঃ আবু সাঈদ

মোঃ আবু সাঈদ

প্রভাষক (আইসিটি)

একজন দক্ষ, উদ্ভাবনী এবং প্রযুক্তি-বান্ধব আইসিটি শিক্ষক, যিনি শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রযুক্তি জ্ঞানের বিকাশ এবং ব্যবহারিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিবেদিত। কম্পিউটার বিজ্ঞান, প্রোগ্রামিং, ডিজিটাল লিটারেসি এবং আধুনিক সফটওয়্যার/হার্ডওয়্যার প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানে অভিজ্ঞ। শিক্ষার্থীদের বয়স ও শ্রেণি অনুযায়ী উপযোগী পাঠ পরিকল্পনা তৈরি এবং বাস্তবভিত্তিক কার্যক্রমের মাধ্যমে ক্লাস পরিচালনায় দক্ষ। কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং, গুগল ও মাইক্রোসফট অ্যাপ্লিকেশন, PHP, C/C++, JavaScript, পাইথন, এইচটিএমএল/সিএসএস সহ বিভিন্ন ডিজিটাল টুল ও প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে পারদর্শী।

আইসিটি কোচিং সেন্টার

banner image

সাজানো-গুছানো এবং কোয়ালিটিফুল ক্লাস কন্টেন্ট দ্বারা অফলাইন অথবা অনলাইনে এইচএসসি ও আলিম শিক্ষার্থীদের আইসিটি কোচিং করানো হয়।

আমাদের সম্পর্কে

Poralekha24.com: স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য Lecture Sheet, MCQ/CQ, Presentation ও অনলাইন ও অফলাইন কোচিং সেবা।

কপিরাইট © ২০২৫ - ২০২৫ Poralekha24.com. সকল অধিকার সংরক্ষিত।